ঢাকা ০২:৩৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জন্মের পরপরই শিশুকে বলি দেয় আদিবাসীরা!

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৪:১৪:২২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ জানুয়ারী ২০২১
  • ১৫৭ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ২০২১ সালে এসেও বাবা-মা সন্তান জন্মের পর বলি দেন। কতটা নিকৃষ্ট ধরনের কাজ বুঝতেই পারছেন। আফ্রিকার শেষ সীমান্তের ইথিওপিয়ার ওমো ভ্যালিতে বসবাস করে ৯ উপজাতি। সেখানকার মোট জনসংখ্যা প্রায় ২ লাখ ২৫ হাজার। তারা এখনো সভ্য সমাজের মানুষ হতে পারেননি।

তাদের জীবন-ধারণ অনেক বিচিত্র। এখনো আদিবাসীরা উলঙ্গভাবেই জীবন-যাপন করতে অভ্যস্ত। তাদের শরীরে কিছু গয়না থাকে। এমনকি বিচিত্র এ আদিবাসী নারীরা তাদের ঠোঁট কেটে বড় করার চেষ্টা করেন।

jagonews24

ঠোঁটের কাটা স্থানে বড় বড় চাকার গয়না পরেন। যুগ যুগ ধরে তারা এসব নিয়ম-নীতি মেনে আসছেন। এর পেছনেও রয়েছে রহস্য। তাদের মতে, ঠোঁটের পাতার আকার যত বড় হবে; তত বেশি সুন্দরী হিসেবে তারা গণ্য হবেন। পাতার আকার-আয়তন বিবেচনায় মেয়ের বাবা যৌতুক হিসেবে ছেলেপক্ষ থেকে ৪০ থেকে ৬০টি গরু পেয়ে যান।

করোনায় হারিয়ে যাচ্ছে অনেক আদিবাসীদের ভাষা!

এ ছাড়াও সুরী উপজাতির কিশোরীদের প্রথা অনুসারে বয়ঃসন্ধিকালে সামনের পাটির দাঁত ভেঙে ফেলা হয়। এতে না-কি তাদের সৌন্দর্য বাড়ে। তবে এ প্রথা খুবই বিপজ্জনক। তরুণীদের জন্য মানসিক ও শারীরিক ক্ষতির কারণ হয়ে দেখা দেয়।

jagonews24

ওমো ভ্যালিতে রয়েছে আরবোরে, কারো, কনসো, দাসনেটেক নামক উপজাতিরা। এসব স্থানে অনেক পর্যটকের আনাগোনা দেখা যায়। মূলত এদের আজব জীবন-ধারণ পদ্ধতি দেখতেই পর্যটকরা সেখানে ভিড় করেন।

ভারতীয় আফ্রিকান আদিবাসী

ওমো ভ্যালির আদিবাসীরা পুঁতির মালা তৈরি করেন। যা বেশ দৃষ্টিনন্দন। এগুলো বিক্রি করেই তারা রোজগার করেন। পর্যটকরাও গিয়ে এসব পুঁতির গয়না কিনে থাকেন। তারা শরীরে চুন দিয়ে বিভিন্ন নকশা করেন।

jagonews24

এসব আদিবাসী সম্প্রদায় নিয়ম-নীতির দিক থেকে কখনোই ছাড় দেন না। তারই নিকৃষ্ট উদাহরণ হলো সন্তান হত্যা। স্বাভাবিকভাবেই অনেকের গর্ভে দুর্বল, অপুষ্টির শিকার কিংবা শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী শিশু জন্মায়। তবে ওমো ভ্যালির কোনো ঘরে এমন সন্তান জন্মালেই তাকে মরতে হবে।

এসব শিশুকে তারা ‘মিঙ্গি’ বলে সম্বোধন করেন। এমন সন্তান জন্ম নিলে মুখ ফিরিয়ে দেখেন না মা-ও। জন্মের পর শিশুর মধ্যে কোনো ত্রুটি দেখলেই তাকে বিশেষ রীতি-নীতি মেনে হত্যা করা হয়। এমন শিশু না-কি গোট উপজাতির উপর অভিশাপ নিয়ে আসে, এমনই ধারণা তাদের।

jagonews24

এজন্য দ্রুত ওই শিশুকে বলি দেওয়ার জন্য প্রস্তুত হয় সবাই। শিশুর মুখে, নাকে ও কানে মাটি ভরে দেওয়া হয়, যাতে সে নিশ্বাস নিতে না পারে। এরপর ছোট্ট শিশুটিকে ডুবিয়ে দেওয়া হয় নদীতে। অবিশ্বাস্য হলেও এমন ঘটনা প্রায় দিনই ঘটে।

যদি কোনো বাবা-মা মায়ায় পড়ে তার শারীরিক ত্রুটির কথা লুকিয়ে রাখেন; তাদের জন্যও রয়েছে শাস্তির ব্যবস্থা। তারা শিশুটিকে যদি লুকিয়েও বড় করেন এবং পরবর্তীতে যদি কেউ দেখে ফেলেন; তখন ওই শিশুকে কেড়ে নিয়ে হত্যা করা হয়।

jagonews24

আদিবাসী এসব সম্প্রদায়ের মতে, একজনের জন্য তো আর পুরো সম্প্রদায় শাস্তি ভোগ করবে না। এজন্যই হত্যা করা হয় এসব শিশুকে। তবে সেখানকার সরকার শিশু হত্যার বিষয়ে এখন জোরালো পদক্ষেপ নিয়েছেন।

যদিও পৃথিবীর বিচ্ছিন্ন এসব জনগণ শুধু নিজেদের সমাজের নিয়ম-নীতিই মানতে পছন্দ করেন। তবুও ইথিওপিয়ান সরকার বর্তমানে কিছু এনজিওর সঙ্গে মিলে এমন নৃশংস কর্মকাণ্ড বন্ধ করার প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন। তারা সঠিক সময়ে কোপায় পৌঁছে এসব অসহায় শিশুর প্রাণ বাঁচানোর চেষ্টা করছেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জন্মের পরপরই শিশুকে বলি দেয় আদিবাসীরা!

আপডেট টাইম : ০৪:১৪:২২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ জানুয়ারী ২০২১

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ২০২১ সালে এসেও বাবা-মা সন্তান জন্মের পর বলি দেন। কতটা নিকৃষ্ট ধরনের কাজ বুঝতেই পারছেন। আফ্রিকার শেষ সীমান্তের ইথিওপিয়ার ওমো ভ্যালিতে বসবাস করে ৯ উপজাতি। সেখানকার মোট জনসংখ্যা প্রায় ২ লাখ ২৫ হাজার। তারা এখনো সভ্য সমাজের মানুষ হতে পারেননি।

তাদের জীবন-ধারণ অনেক বিচিত্র। এখনো আদিবাসীরা উলঙ্গভাবেই জীবন-যাপন করতে অভ্যস্ত। তাদের শরীরে কিছু গয়না থাকে। এমনকি বিচিত্র এ আদিবাসী নারীরা তাদের ঠোঁট কেটে বড় করার চেষ্টা করেন।

jagonews24

ঠোঁটের কাটা স্থানে বড় বড় চাকার গয়না পরেন। যুগ যুগ ধরে তারা এসব নিয়ম-নীতি মেনে আসছেন। এর পেছনেও রয়েছে রহস্য। তাদের মতে, ঠোঁটের পাতার আকার যত বড় হবে; তত বেশি সুন্দরী হিসেবে তারা গণ্য হবেন। পাতার আকার-আয়তন বিবেচনায় মেয়ের বাবা যৌতুক হিসেবে ছেলেপক্ষ থেকে ৪০ থেকে ৬০টি গরু পেয়ে যান।

করোনায় হারিয়ে যাচ্ছে অনেক আদিবাসীদের ভাষা!

এ ছাড়াও সুরী উপজাতির কিশোরীদের প্রথা অনুসারে বয়ঃসন্ধিকালে সামনের পাটির দাঁত ভেঙে ফেলা হয়। এতে না-কি তাদের সৌন্দর্য বাড়ে। তবে এ প্রথা খুবই বিপজ্জনক। তরুণীদের জন্য মানসিক ও শারীরিক ক্ষতির কারণ হয়ে দেখা দেয়।

jagonews24

ওমো ভ্যালিতে রয়েছে আরবোরে, কারো, কনসো, দাসনেটেক নামক উপজাতিরা। এসব স্থানে অনেক পর্যটকের আনাগোনা দেখা যায়। মূলত এদের আজব জীবন-ধারণ পদ্ধতি দেখতেই পর্যটকরা সেখানে ভিড় করেন।

ভারতীয় আফ্রিকান আদিবাসী

ওমো ভ্যালির আদিবাসীরা পুঁতির মালা তৈরি করেন। যা বেশ দৃষ্টিনন্দন। এগুলো বিক্রি করেই তারা রোজগার করেন। পর্যটকরাও গিয়ে এসব পুঁতির গয়না কিনে থাকেন। তারা শরীরে চুন দিয়ে বিভিন্ন নকশা করেন।

jagonews24

এসব আদিবাসী সম্প্রদায় নিয়ম-নীতির দিক থেকে কখনোই ছাড় দেন না। তারই নিকৃষ্ট উদাহরণ হলো সন্তান হত্যা। স্বাভাবিকভাবেই অনেকের গর্ভে দুর্বল, অপুষ্টির শিকার কিংবা শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী শিশু জন্মায়। তবে ওমো ভ্যালির কোনো ঘরে এমন সন্তান জন্মালেই তাকে মরতে হবে।

এসব শিশুকে তারা ‘মিঙ্গি’ বলে সম্বোধন করেন। এমন সন্তান জন্ম নিলে মুখ ফিরিয়ে দেখেন না মা-ও। জন্মের পর শিশুর মধ্যে কোনো ত্রুটি দেখলেই তাকে বিশেষ রীতি-নীতি মেনে হত্যা করা হয়। এমন শিশু না-কি গোট উপজাতির উপর অভিশাপ নিয়ে আসে, এমনই ধারণা তাদের।

jagonews24

এজন্য দ্রুত ওই শিশুকে বলি দেওয়ার জন্য প্রস্তুত হয় সবাই। শিশুর মুখে, নাকে ও কানে মাটি ভরে দেওয়া হয়, যাতে সে নিশ্বাস নিতে না পারে। এরপর ছোট্ট শিশুটিকে ডুবিয়ে দেওয়া হয় নদীতে। অবিশ্বাস্য হলেও এমন ঘটনা প্রায় দিনই ঘটে।

যদি কোনো বাবা-মা মায়ায় পড়ে তার শারীরিক ত্রুটির কথা লুকিয়ে রাখেন; তাদের জন্যও রয়েছে শাস্তির ব্যবস্থা। তারা শিশুটিকে যদি লুকিয়েও বড় করেন এবং পরবর্তীতে যদি কেউ দেখে ফেলেন; তখন ওই শিশুকে কেড়ে নিয়ে হত্যা করা হয়।

jagonews24

আদিবাসী এসব সম্প্রদায়ের মতে, একজনের জন্য তো আর পুরো সম্প্রদায় শাস্তি ভোগ করবে না। এজন্যই হত্যা করা হয় এসব শিশুকে। তবে সেখানকার সরকার শিশু হত্যার বিষয়ে এখন জোরালো পদক্ষেপ নিয়েছেন।

যদিও পৃথিবীর বিচ্ছিন্ন এসব জনগণ শুধু নিজেদের সমাজের নিয়ম-নীতিই মানতে পছন্দ করেন। তবুও ইথিওপিয়ান সরকার বর্তমানে কিছু এনজিওর সঙ্গে মিলে এমন নৃশংস কর্মকাণ্ড বন্ধ করার প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন। তারা সঠিক সময়ে কোপায় পৌঁছে এসব অসহায় শিশুর প্রাণ বাঁচানোর চেষ্টা করছেন।